‘দেশবাসী ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কার্যালয় চায় না’
ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৪
মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী | ছবি : সংগৃহীত
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী। তিনি বলেছেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কার্যালয় খোলা হোক, তা দেশের জনগণ চায় না।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের ঢাকা সফরের সময় অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা ঢাকায় শিগগিরই জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপন করা হবে বলে জানান। তার যুক্তি, কার্যালয় হলে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সরাসরি তদন্ত করতে পারবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। এরপর সরকারের দুয়েকজন প্রতিনিধি বিপরীত মন্তব্যও করেছেন। এইসব মিলিয়ে দেশের আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে এ নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী এর কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সম্পর্কিত নীতিমালায় সমকামীদের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অথচ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে সমকামিতা ইসলামি ও রাষ্ট্রীয় আইনে নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। নীতিমালায় নারী-পুরুষের উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনে সমানাধিকার ও সর্বজনীন যৌনশিক্ষার ধারাগুলোও কোরআন-সুন্নাহর সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ঢাকায় এই কার্যালয় খোলা হলে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মানবাধিকার রক্ষার নামে সমকামীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবে। এতে দেশে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গুম, খুন, দুর্নীতি, উলামায়ে কেরামের ওপর জুলুম-অত্যাচার, বিরোধী দলমতকে দমনের সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন কেন নিরবতা বজায় রেখেছিল?
মাওলানা হাসানাত আমিনী বলেন, দখলদার ইসরায়েল প্রতিদিন ফিলিস্তিনে ও লেবাননে গণহত্যা চালিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। সেখানে কেন তাদের কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই? এছাড়াও আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, লেবানন, ভারত ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে আগ্রাসন মোকাবিলায় মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধেও তারা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, যাদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার পাল্লা ভারি, তারা কীভাবে অন্যের মানবাধিকার রক্ষা করবে? তাই আমরা বাংলাদেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ইসলামী তাহযিব-তামাদ্দুন অক্ষুন্ন রাখার বৃহত্তর স্বার্থে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় খোলার এজেন্ডা থেকে বিরত থাকার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএইচ/