সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে ৬২টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, গণভোট, সংসদের উচ্চকক্ষ, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে নিজেদের লিখিত প্রস্তাব জমা দেয় বিএনপির প্রতিনিধি দল। পরে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান।

তিনি বলেন, প্রস্তাবে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদের রক্তের অঙ্গীকার ও বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যাতে সংসদীয় একনায়কতন্ত্র সৃষ্টি না হয়, সেগুলো মাথায় রেখে আমাদের প্রস্তাবনা দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনার প্রস্তাব বিএনপি দিয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পরপর দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন না হয় সে বিধান রেখেছি। নতুন করে সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টির বিধানের প্রস্তাব করেছি।

তার মতে, বিএনপির প্রস্তবনায় ব্যালেন্স অব পাওয়ারের কথা বলা হয়েছে। সংস্কার কমিটি সুপারিশ চূড়ান্ত করে সরকারকে দেবে। তারপর নির্বাচিত সরকার এসে এসব সংশোধন করবে।

বিচার বিভাগের বিষয়ে বিএনপি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ যাতে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকে।

উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রী পদ সৃজনের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা আগে ছিল, আমরা তা পুনর্প্রবর্তনের বিধানের প্রস্তাব করেছি।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষের এক নম্বর আকাঙ্ক্ষা, সেটি আদালতের বিচারাধীন আছে, আশা করি মানুষের পক্ষে আসবে। গণভোটের বিধান পুনর্প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছি।

বিএনপির নেতা বলেন, আমরা প্রস্তাবনায় প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয়ে অ্যাড্রেস করেছি। যাতে সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধিত হয় এবং সেটার রূপকার জনগণ পায়। রাষ্ট্রের সব অঙ্গে যাতে সবক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হয়, সেই প্রস্তাব দিয়েছি। 

এক প্রশ্নের উত্তরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছি। যাতে এটা গণতান্ত্রিক সংবিধান সংশোধন হয় এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়।

সংসদের অবর্তমানে সংবিধান সংশোধনীর অনুমোদন কীভাবে হবে এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবনাগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পেশ করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞসহ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে চূড়ান্ত করবেন।

এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন রানা।

ডিআর/এমএইচএস