‘৬১ উপজেলার দারিদ্র্য বিমোচনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে সরকার’
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৭
উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম/ছবি : সংগৃহীত।
৬১টি উপজেলার দরিদ্র জনগণকে দারিদ্র্যসীমার নিচ থেকে বের করে আনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করার পরিকল্পনা নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘৬১টি উপজেলায় ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। আমরা দারিদ্র্যসীমার নিচের মানুষদের বের করে আনতে খাদ্য ও জীবিকা সহায়তা প্রদানের একটি কর্মসূচি নিচ্ছি।’
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি পরিবার খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০০০ টাকা এবং জীবিকা সহায়তা হিসেবে ২০০০ টাকা পাবে। ৬১টি উপজেলা যেখানে ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, সেখানে পাইলট ভিত্তিতে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’
এই ৬১টি উপজেলার মধ্যে রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ ২৪টি উপজেলা রয়েছে। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্য জেলায় ১৪টি, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার ১০টি, খুলনা বিভাগের পাঁচটি, ময়মনসিংহ বিভাগের সাতটি এবং বরিশাল বিভাগের একটি উপজেলা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এছাড়া আরো ১৪টি উপজেলায় ৪৭ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রাথমিকভাবে এসব উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মন্ত্রণালয়। ১৪টি উপজেলার মধ্যে সিলেটে বিভাগে পাঁচটি, চট্টগ্রামে চারটি, রাজশাহীতে দুটি, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশালে একটি করে উপজেলা রয়েছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করার জন্য তারা এনজিওসহ দাতা সংস্থাগুলোকে এই কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।’
আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বন্যার সময় প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী, ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন মন্ত্রণালয় বন্যার্তদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চালাচ্ছে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৬ আগস্ট থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বন্যা দুর্গতসহ ৪৩টি জেলায় বন্যার্তদের জন্য ৪ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা (নগদ) এবং ৩৭ হাজার ৫০০ ব্যাগ শুকনো খাবার বরাদ্দ করেছে।
এছাড়া, মন্ত্রণালয় এই সময়ের মধ্যে ত্রাণ প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ৮ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন চাল, শিশুর খাদ্যের জন্য ২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা এবং পশুখাদ্য কেনার জন্য ২ দশমিক ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামতের জন্য ১ হাজার ৮০০ বান্ডিল ঢেউ টিন (সিআই) শিট এবং ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে মন্ত্রণালয়।’
ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ দাতা ও স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, স্বেচ্ছাসেবক, স্থানীয় জনগণ এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ তরুণ শিক্ষার্থীরা আগস্ট মাসে বন্যাকবলিত এলাকায় সহায়তা প্রদানে উল্লেখযোগ্যভাবে সাড়া দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্যা কবলিত এলাকায় স্বাভাবিক জীবন ও জীবিকা ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রণালয় নিচু এলাকায় দীর্ঘ দিনের জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজ করছে।’
এসবি