খুলনায় সাবেক আইজিপি, কমিশনারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১
ছবি : সংগৃহীত।
খুলনায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কেএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হকসহ আরও ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম খালিশপুর আমলি আদালতে এ মামলাটি করেছেন আনিছা সিদ্দিকা। তার অভিযোগ, তার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে পুলিশ কর্মকর্তারা সন্ত্রাসী আচরণ করেন, মালামাল ভাঙচুর করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
আদালতের বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন মামলাটি গ্রহণ করে খালিশপুর থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম লিটন।
এ মামলায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক কেএমপি কমিশনার মোজাম্মেল হক, খালিশপুর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গিয়াস, সহকারী পুলিশ কমিশনার গোপিনাথ কাঞ্জিলালসহ আরও ১৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি অভিযোগের আওতায় আছেন। আসামিদের মধ্যে এসআই, কনস্টেবলসহ পুলিশের বিভিন্ন পদবির সদস্য রয়েছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, বাদীর ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা তানজিলুর রহমান। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন ‘বিসা বালির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী জড়িত না। যেটি বিসা বালির ভাই সুখরঞ্জন বালি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর জানাজায় উপস্থিত হয়ে মন্তব্য করেন।’
স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক ও তার সহকর্মীরা আনিছা সিদ্দিকার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করেন। তারা বাড়ির তৃতীয় তলায় ঘরের দরজা খোলার জন্য তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাকে গুলি করার হুমকি দেন। এরপর আনিছা ছিদ্দিকা দরজা খুলে দেন। দরজা খুলতে দেরি হওয়ার কারণে ওসি মুনীর উল গিয়াস তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন তাকে সহকারী পুলিশ কমিশনার ও ওসি তার ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। তাকে বলা হয় ‘যুক্তরাষ্ট্রে বসে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছাড়িয়ে সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা ও জনগণকে উত্তেজিত করছে।’ এরপর তারা বাড়ির মালামাল ভাঙচুর করে এবং তিনটি ল্যাপটপ, চারটি মোবাইল ফোনসহ কিছু মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যান।
তারা বাড়ি দ্বিতীয় তলায় ভাঙচুর এবং নিচতলায় অবস্থানরত ব্যাচেলরদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে আনিছা সিদ্দিকা, মো. রকিবুল ইসলাম ও মো. তামিম ইকবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে খালিশপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫ ডি ধারায় মামলা দেওয়া হয়।
বাদী পক্ষের দাবি, এসব পুলিশ কর্মকর্তারা একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন, যার ফলে পুরো ঘটনায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘বাদীর ছেলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রবাসী তানজিলুর রহমানের মা আনিছা সিদ্দিকাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেইসঙ্গে টাকা-পয়সা ও ল্যাপটপ নিয়ে যাওয়া এবং বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। এ ঘটনার পর পুরো বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।’
এসবি