Logo
Logo

ইসলাম

মুসলিমদের কাছে ‘বিসমিল্লাহ’ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১১

মুসলিমদের কাছে ‘বিসমিল্লাহ’ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

যেকোনো ভালো কাজের শুরুতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ ও স্মরণ করা সুন্নত

ইসলামে প্রতিটি কাজের শৃঙ্খলা ও নিয়ম-নীতি শেখানো হয়েছে। যেকোনো ভালো কাজের শুরুতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ ও স্মরণ করা সুন্নত। আর উত্তমরূপে আল্লাহকে স্মরণ করা হয় বিসমিল্লাহ পড়ার দ্বারা। ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পুরো এই বাক্যটির অর্থ- পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। পুরো বিসমিল্লাহকে আরবিতে এক কথায় ‘তাসমিয়া’ও বলা হয়। 

বিসমিল্লাহর ফজিলত সম্পর্কিত একাধিক হাদিস বর্ণিত রয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া না হলে, তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’ (মুসনাদে আহমাদ : ১৪/৩২৯)

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘যখন বিসমিল্লাহ নাজিল হয় তখন মেঘমালা পূর্ব দিকে দৌড়াতে লাগল, সাগরগুলো উত্তাল অবস্থায় ছিল, সব প্রাণী নিস্তব্ধভাবে তা শুনছিল। শয়তানকে দূরে বিতাড়িত করা হয়েছিল। এ সময় আল্লাহ তায়ালা নিজ ইজ্জত ও আত্মমর্যাদার কসম খেয়ে বলেছিলেন, যে জিনিসের ওপর বিসমিল্লাহ পড়া হবে, সেই জিনিসে অবশ্যই বরকত দান করব।’ (তাফসিরে তাবারি : ১/৫০)

একই সঙ্গে ‘বিসমিল্লাহ’র পুরো অংশটি পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতও বটে। সেই বিবেচনায় বিসমিল্লাহ পড়লে এর প্রতিটি হরফের বিনিময়ে ১০টি করে নেকি অর্জিত হবে। বিসমিল্লাহর মধ্যে সর্বোমোট ১৯টি হরফ রয়েছে। সেই হিসেবে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়লে অন্তত ১৯০টি নেকি লাভ হবে ইনশাআল্লাহ।

বিসমিল্লাহর মাধ্যমে রোগের নিরাময় হয়েছে- সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে এমন নজিরও রয়েছে। একবার হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-এর বিপক্ষে শত্রু যুদ্ধের ময়দানে অপেক্ষা করছিল। হজরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদের ধর্মে সত্যতা পরীক্ষার জন্য শত্রুরা তাকে বিষে ভরা একটি শিশি দিলো। তিনি শিশির সম্পূর্ণ বিষ ‘বিসমিল্লাহ’ পড়ে পান করলেন। কিন্তু বিসমিল্লাহর বরকতে বিষের বিন্দুমাত্র নেতিবাচক প্রভাব তার ওপর পড়েনি। (তাফসিরে কাবির)

বিখ্যাত গ্রন্থ মসনভী শরিফে হজরত মাওলানা রুমি লিখেছেন, বিসমিল্লাহ হলো- যাবতীয় রোগের মহৌষধ, যেই ব্যক্তি এটি পাঠ করবে, তার সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে। 

সর্বোপরি, মুসলিমদের সবকাজে আল্লাহকে স্মরণ করা কিংবা বিসমিল্লাহ পড়া শুধু সুন্নাতই নয়; বরং জরুরি। কারণ, আল্লাহকে স্মরণ না করলে ক্ষতির আশংকা আছে। খাওয়া দাওয়াসহ যেকোনো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া হলে সেই কাজে শয়তানের অংশীদারি থাকে না। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে খাবারে বিসমিল্লাহ পড়া হয় না, সে খাবারে শয়তানের অংশ থাকে। সেই খাবার মানুষের সঙ্গে শয়তানও ভক্ষণ করে (মুসলিম, হাদিস-৫৩৭৬)। সুতরাং আসুন আমরা যেকোনো ভালো কাজের শুরুতে বেশি বেশি বিসমিল্লাহ পড়ি এবং আল্লাহর তরফ থেকে অশেষ বরকত ও সওয়াব লাভ করি। মহান স্রষ্টা আমাদের তাওফিক দান করেন। আমীন


Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর