ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি
আতঙ্কে দিন কাটবে অবৈধ বাংলাদেশিদের
নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২
ছবি : সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের আতঙ্কে দিন কাটবে। অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদেরও আগামী চার বছর আতঙ্কেই দিন কাটাতে হবে বলে মতামত দিয়েছেন বাংলাদেশি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম অভিবাসী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন। তার নির্বাচনী ইশতেহারেও বিষয়টি উল্লেখ ছিল।
বাংলাদেশি পর্যবেক্ষকদের মতে ট্রাম্পের অভিবাসী প্রত্যাবাসনের ঘোষণায় বাংলাদেশিদের ওপর কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে।
মার্কিন সরকারি সংস্থা ‘ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিক্স’- এর তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমশক্তিতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অভিবাসীদের হার আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল সেক্টরে কর্মরত তিন কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৯ শতাংশই অভিবাসী। অভিবাসীরা তুলনামূলকভাবে কম বয়সী। তাদের কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
কংগ্রেশনাল বাজেট অফিসের অনুমান অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০৩৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সী অভিবাসীদের প্রায় ৯১ শতাংশের বয়স ৫৫ বছরের কম হবে। যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ। এছাড়াও মার্কিন কৃষিখাত সম্পূর্ণরূপে অভিবাসী শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশি অভিবাসী আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশি মুসলিমদের জন্য ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া কোনো সুখবর নয়। তিনি মুসলিম ও অভিবাসী বিরোধী। যারা মামলায় হেরেও বছরের পর বছর এখানে বসবাস করছেন ট্রাম্প তাদের জন্য দুঃস্বপ্ন হবে। ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি অভিবাসীদের জন্য খুব কঠোর ও কঠিন হবে। তবে ছোট ব্যবসার পাশাপাশি উচ্চ আয়ের পরিবারের জন্য ভাল হবে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী ড. গোলাম চৌধুরী ইকবাল বলেন, ‘ট্রাম্পের পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। তার অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির কারণে গ্রিন কার্ড, ভিসা প্রক্রিয়া ও অভিবাসীদের আইনি জটিলতা বাড়তে পারে। সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় ট্রাম্প প্রশাসনের আগের ব্যর্থতার নজির রয়েছে। যা বাংলাদেশি অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।’
বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারিক হাসান বলেন, ‘অভিবাসীদের অনুপস্থিতির বড় প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতে। যদি অভিবাসীদের পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়, তাহলে ধরে নিন, মাথাপিছু জিডিপি ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমে যাবে। অর্থাৎ কিছু মানুষ কমে যাওয়ার (অভিবাসীদের অনুপস্থিতি) যে প্রভাব, তার প্রতিফলন ঘটবে জিডিপিতে।’
কেইউ/এমআই