ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কাজে লাগছে না জনসাধারণের। ২ বছর ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। সেতু নির্মাণের পরও দুই পাড়ের বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আগের মতোই।
জানা যায়, ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বৈকুন্ঠপুর কালিগঙ্গা নদীর উপর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু (সিআইবিআরআর) প্রকল্প’-এর আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। দুই পাড়ে ৬৩০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। তবে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণকাজ শতভাগ শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই নদীর খেয়া পার হচ্ছে দুই পাড়ের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষ। বিলনালাই সিংজুরী ইউনিয়ন ভায়া বৈকুন্ঠপুর বালিয়াবাধার এ সড়কে কালিগঙ্গা নদীর উপর সেতুটি চালু হলে ঘিওর উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে ঢাকার দুই প্রতিষ্ঠানকে সেতুসহ সংযোগ সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দরপত্র অনুযায়ী ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরই মধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার নির্দেশনা ছিল। এ সময়ের মধ্যেও কাজটি শেষ হয়নি। ৩৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
এদিকে, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা এবং অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হলেও ভূমি অধিগ্রহণ আর স্থাপনার ক্ষতিপূরণের টাকা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বুঝে পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝে না পাওয়ায় জমি ছাড়ছেন না তারা।
জমি ও স্থাপনার মালিকরা বলছেন, আড়াই বছর ধরে ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান বলেন, ‘সেতু নির্মাণের পর একদিনের জন্যও যানবাহন এ পথে চলতে পারেনি। আমাদের আশা পূরণে সেতু নির্মাণ করলেও দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতু ব্যবহার করতে পারছি না। নদী পার হতে হয় খেয়ার মাধ্যমে।’
আশাপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে মানিকগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়াতের সব থেকে সহজ মাধ্যম হবে এটি। কারণ, কম সময়ে দ্রুত মানিকগঞ্জ যেতে পারব আমরা।’
বালিয়াবাধা গ্রামের মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘সেতু নির্মাণের আগে ভূমি অধিগ্রহণ করলে এমন বিড়ম্বনা হতো না। সংযোগ সড়ক না হওয়ায় জরুরি মুহূর্তে জেলা শহরে যেতে হলে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়।’
সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. মাসুদ মিয়া বলেন, ‘কাজ শুরু করতে গেলে ভূমির মালিকরা বারবার বাধা দিচ্ছেন। এমন জটিলতায় বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অধিগ্রহণ হয়ে গেলে কাজ শেষ করতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগবে।’
ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ব্রিজ তো হবেই! ডিসি অফিস থেকে ল্যান্ড অর্ডার পেলেই ঠিকাদারের লোকজন কাজ শুরু করবে ‘
এএইচ/এমজে/ এটিআর