ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল
আইসিইউ-সিসিইউ না থাকায় মুমূর্ষু রোগীদের ভোগান্তি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৭
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আইসিইউ, সিসিইউ ও নিউরোলজি বিভাগসহ কয়েকটি ইউনিট না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মুমূর্ষু রোগী ও তাদের স্বজনদের। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে রোগী নিয়ে এলে কাঙ্ক্ষিত সেবা না থাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় দিনাজপুর কিংবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এতে মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বজনরা। এ ছাড়াও প্রিম্যাচিউরড শিশুদের এনআইসিইউ ইউনিট না থাকায় তাদেরও চিকিৎসা নিয়ে রয়েছে ঘাটতি।
এ নিয়ে ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। তারা দাবি জানাচ্ছেন, দ্রুত সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ের এ হাসপাতালে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করার।
এদিকে, কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ে চালু হবে আইসিইউ।
জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু হয় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের। ১৯৯৭ সালে সেটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তী সময়ে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ৭তলা ভবনের উদ্বোধনের মাধ্যমে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। বছরের পর বছর এ হাসপাতালের শয্যার সংখ্যার উন্নতি হলেও সেবার মান নিয়ে রয়েছে হাজারো প্রশ্ন।
অনেক ভুক্তভোগী বলছেন, জরুরি বিভাগে মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে আসা হলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দিনাজপুর কিংবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালে নেই কোনো আইসিইউ, সিসিইউয়ের ব্যবস্থা। নেই নিউরোলজি বিভাগও। ফলে অল্প সময়ে দূরদূরান্তের রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনাও।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন হাসপাতালের ব্যবস্থা কমিটির সভাপতি থাকার পরও উন্নত হয়নি চিকিৎসা সেবার মান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, গাইনি বিভাগ, শিশু বিভাগ থাকলেও নেই নিউরোলজি বিভাগ। ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচ উপজেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ের অনেক রোগী আসেন এখানে চিকিৎসা নিতে। প্রতিদিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন প্রায় ৬শ থেকে ৭শ রোগী। হাসপাতালটিতে নেই আইসিইউ, সিসিইউ, এনআইসিইউ, পিআইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিটও। এসব না থাকার কারণেই হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগী এলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য জেলার হাসপাতালে। এ ছাড়াও প্রিম্যাচিউরড শিশুদের এনআইসিইউ ইউনিট না থাকায় তাদেরও চিকিৎসা নিয়ে রয়েছে ঘাটতি।
এদিকে, ঠাকুরগাঁও থেকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের দূরত্ব প্রায় ৫৮ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘণ্টা। রংপুর মেডিকেলের দূরত্ব প্রায় ১০১ কিলোমিটার। যেতে সময়ের প্রয়োজন প্রায় ৩ ঘণ্টা। সঠিক সময়ে সেবা না পাওয়ায় সড়কেই মারা যাচ্ছেন অনেক রোগী। দ্রুত সময়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের সব ইউনিট চালুর মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদানের দাবি সবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, অল্প সময়ের মধ্যে আইসিইউ চালু হবে।
এমজে/ওএফ