দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। এদিকে পর্যটন নগর তেঁতুলিয়ায় বাড়ছে ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড়।
চলতি অক্টোবরের শেষের দিকে উত্তরের মেঘমুক্ত আকাশে উঁকি দিতে দেখা যাচ্ছে হিমালয় পর্বতমালার তৃতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। বিকেল হলেই দেখা মিলে কাঞ্চনজঙ্ঘার।
আর এতেই মোক্ষম এ সময়টিকে উপভোগ করতে ভ্রমণপ্রেমীরা পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন পর্যটন নগরী তেঁতুলিয়ায়। এদিকে পর্যটকদের বরণে নতুনভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনসহ পর্যটনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
নতুন রূপে সাজতে শুরু করেছে হোটেল, ও রিসোর্টগুলো। দেশের অন্যতম পর্যটক সম্ভাবনাময় এলাকা বলা হয় তেঁতুলিয়াকে।
পিকনিক কর্নার, ঐতিহাসিক ডাকবাংলো, মহানন্দা নদী, সমতলের চা বাগান ও বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে সারা বছর ভ্রমণপ্রেমীরা ছুটে আসেন এখানে। অনেকেই আবার সীমান্তের তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারের পাশে মহানন্দা নদীর তীরে বসে রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
মুগ্ধ হয়ে হারিয়ে যান প্রকৃতির মাঝে। যার কমতি নেই এখনো। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে একমাস মেঘমুক্ত আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেওয়ায় এ সময়ে, কয়েকগুণ বাড়ে ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড়
এদিকে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু পর্যটকের দেখা মিললেও তাদের রয়েছে নানান অভিযোগ। কিন্তু মেঘ ও কুয়াশার কারণে এবার এখনো দেখা দেয়নি কাঙ্ক্ষিত সেই কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আব্দুল করিম বলেন, গতকাল সপরিবারে ঘুরতে এসেছি। তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। জায়গাটা অনেক ভালো লেগেছে।
ইস্মেতা আক্তার বলেন, সমতলের চা বাগান ও তেঁতুলিয়ার সীমান্তের ডাকবাংলোতে মহানন্দা নদীর পাশে সব থেকে বেশি সময় অতিক্রম করেছি। জায়গাটা এসেই অনেক ভালো লেগেছে। তবে জায়গার আশেপাশের অবস্থা কিছুটা নাজুক ছিল।
একই অভিযোগ করেন ঢাকা থেকে আসা আমজাদ রেজা। তিনি বলেন, পরিবারসহ সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গা দেখে শেষে তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারে এসেছি। কিন্তু এখানে আমাদের ঐতিহ্যর সব ধরনের স্থাপনা ভেঙে পড়ে আছে। পরিবেশটাও অপরিষ্কার। যেখানে সন্তানদের বিনোদন দিতে আসা সেখানে এ অবস্থা দেখে খুব খারাপ লাগছে।
এর মাঝে উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে শীত মৌসুমের নতুন বছরে পর্যটক বরণে সাজানো শুরু করেছে হোটেল,ও রিসোর্টগুলো। গত বছরগুলোতে পর্যটকের আগমন কিছুটা কম থাকলেও চলতি মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ব্যবসায়ীসহ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।
তেঁতুলিয়ার কাঠের বাড়ি গেস্ট হাউজের স্বত্বাধিকারী হুমায়ুন কবির উজ্জ্বল বলেন, তেঁতুলিয়ায় মূলত কাঞ্চনজঙ্ঘাকে ঘিরে পর্যটকরা আসেন। বর্তমানে পর্যটক আসা শুরু হয়েছে। অন্যান্য সময়ের থেকে নভেম্বর মাসে সব থেকে বেশি পর্যটক আসেন। সেটাকে ঘিরে তেঁতুলিয়ার আমরা সব হোটেল, আবাসিক ও রিসোর্ট মালিকরা আছি সবাই নিজ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজাচ্ছি। যাতে করে এবার পর্যটকরা বাড়তি সুবিধা ও বিনোদন পায়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বী বাসসকে বলেন, হিমালয়ের পাদদেশে ঘেরা তেঁতুলিয়া উপজেলায় প্রত্যেক বছরে শীত আগেই শুরু হয়। শীতকে ঘিরে তেঁতুলিয়ার নানান নান্দনিক দৃশ্য উপভোগে পর্যটকদের মনোনিবেশ বাড়ে অক্টোবরের শেষের দিক থেকে। কাঞ্চনজঙ্গা পর্যটকদের হ্রদয়কে বেশি আকর্ষণ করে,সেই কারণে নভেম্বরে পর্যটকদের ভিড়ও বাড়ে। পর্যটকদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেই দিকটা নজরে নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া বিশেষ নজরদারি।
ওএফ