গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারকে ‘স্যার’ না বলায় গ্রাহককে হয়রানি
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৫৩
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারকে ‘স্যার’ না বলায় গ্রাহকের সাথে অসদাচরণ ও ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিষয়টি মোবাইল ফোনে ভিডিও করেছেন ভুক্তভোগী নিজেই। পরে ওই সেকেন্ড ম্যানেজার তার ফোনটি কেড়ে নিতে চেষ্টা করেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের ঝিটকা হরিরামপুর শাখায় ঘটনাটি ঘটে। ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করায় ক্ষিপ্ত হওয়া ব্যক্তির নাম আবুল কালাম আজাদ। উনি ওই শাখায় সেকেন্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।
বাংলাদেশের খবরের ভিডিওতে দেখা যায়, আবুল কালাম আজাদকে ভুক্তভোগী গ্রাহক বলছেন, ‘সম্মান দিয়ে ভাই বলা কি অপরাধ? এখন আপনাদের ভাই বলা যাবে না? স্যার'ই বলতে হবে?’
উত্তরে আবুল কালাম আজাদ বলছেন, ‘ভাই বলা যাবে না, স্যার বলবেন। আপনি ভদ্রতা দেখান। গ্রামীণ ব্যাংকের সবাইকেই স্যার বলতে হবে।’
ভুক্তভোগীর প্রশ্ন, ‘কেন?’ উত্তরে আজাদ আবার বলেন, ‘বলতে হবে এটাই নিয়ম। এটা সবাই বলে।’
পরে গ্রাহক পাল্টা প্রশ্ন করলে সেকেন্ড ম্যানেজার বলেন, ‘আপনি এতো বার্গেনিং (তর্ক) করেন কেন। আপনার কোন সম্পর্কের ভাই উনি (ম্যানেজার)।’
এ সময় ভুক্তভোগীর দিকে আঙ্গুল তুলে কথাবার্তা সাবধানে বলার হুমকি দেন সেকেন্ড ম্যানেজার। পরে গ্রাহক আঙ্গুল নামাতে বললে আবুল কালাম আজাদ গ্রাহককে মারধরের প্রস্তুতি নেন। পরে ধাক্কা দিয়ে ব্যাংক থেকে বের করে দেন।
ভুক্তভোগী উপজেলার ঝিটকা এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী সুব্রত সন্ন্যাসী বলেন, ‘বুধবার দুপুরে একটা চেক নিয়ে টাকা উঠাতে ব্যাংক যাই। পরে তারা আমাকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রেখে বলছে আগামীকাল আসার জন্য। তখন আমি ম্যানেজারকে বলি কাল কখন আসব। এটা বলার পরেই সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। আমাকে ভাই বাদ দিয়ে স্যার বলে সম্বোধন করতে বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে কয়েকটা প্রশ্ন করলে সে আমার দিকে আঙ্গুল তুলে। আমাকে মারতে উদ্যত হয়। পরে আমাকে ব্যাংক থেকে বের করে দেন। তিনি আমার মোবাইলও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর আমি পুরো ঘটনাটি ম্যানেজারকে জানালেও, তিনি কোনো প্রতিকার করেনি।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেকেন্ড ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘উনি স্যার বললে অসুবিধা কোথায়। এইটুকু কথা সহজভাবে নিলেই হয়। তাহলে আমার কিছু করার নেই।’
এ বিষয়ে ব্যাংকের ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার মৃধা বলেন, ‘ভাই বলার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রত্যেক অফিসের একটা নিয়ম-শৃঙ্খলা আছে। তাদের দুজনের মধ্যে আগের কোনো ঘটনার জেরে হয়তো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে।‘
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি সেকেন্ড ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি। উনি বিষয়টি একটু ভুল বুঝছেন।’
এমআই/ওএফ